পাকিস্তানে সামরিক আদালতে বেসামরিকদের শাস্তি, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও ইইউ’র সমালোচনা
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম
সম্প্রতি পাকিস্তানে সামরিক আদালতের মাধ্যমে বেসামরিক নাগরিকদের বিচার ও শাস্তি দেওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও বিচারিক স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শনিবার ( ২১ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের সামরিক আদালত ২৫ জন বেসামরিক নাগরিককে শাস্তি প্রদান করে। এরা সবাই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল, পিটিআইয়ের সমর্থক। ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সহিংসতা দেখা দেয়। ওই সময় পিটিআই সমর্থকরা সামরিক স্থাপনা, সরকারি ভবন ও মনুমেন্টে হামলা চালায়। এ ঘটনার জেরে প্রায় ১০৫ জন বেসামরিক নাগরিকের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে মামলা করা হয়।
সামরিক আদালতের দেওয়া শাস্তির মধ্যে অন্তত ১৪ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এই বিচার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং অভিযুক্তদের আইনি অধিকার রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইইউ এই বিচারকে আইনি স্বচ্ছতার অভাব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইইউ সতর্ক করেছে, পাকিস্তানের সামরিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির (ICCPR) সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এই অবস্থায় পাকিস্তানের জিএসপি প্লাস এবং অন্যান্য সুবিধা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই সুবিধার আওতায় পাকিস্তানের পণ্য ইউরোপীয় বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশ পায়।
জিএসপি প্লাস সুবিধা হারালে পাকিস্তানের রপ্তানি ২০-৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ২০২৩ সালে পাকিস্তানের ইউরোপে মোট রপ্তানির ৭৮ শতাংশই এই সুবিধার আওতায় ছিল, যার বেশিরভাগই ছিল পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্য।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ হারুন শরীফ বলেছেন, “যদি আমরা মানবাধিকার ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হই, তাহলে অর্থনৈতিক চুক্তিগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিচারব্যবস্থা ও সংবিধান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলে। তবে দেশটি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।
সামরিক আদালতে বেসামরিকদের বিচার পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক জটিল করেছে। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হলে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন উপদেষ্টা
বগুড়ার ধুনট পল্লীতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই
দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ
সিদ্দিরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু
নাচোলে পিয়ারাবাগানে এক গৃহবধূ খুন
৫ জানুয়ারি থেকে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মোটর থেকে বৈদ্যুতিক তার খুলতে প্রাণ গেল যুবকের
কারখানায় আগুন, পরিদর্শনে হাতেম
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই
ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০
আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাতের আধারে অসহায় ব্যাক্তিদের বাড়ির দরজায় গিয়ে কম্বল দিলেন ইউএনও
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রশংসা করলেন রাহাত, জানালেন নিজ অনুভূতি
সাবেক দুদক কমিশনার জহরুল হকের পাসপোর্ট বাতিল, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শ্রীপুরে ভুয়া মেজর আটক
প্রশ্ন: কিসব কারণে বিয়ের বরকত নষ্ট হয়ে যায়?
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপম দৃষ্টান্ত মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)
আল-কুরআন তাজকেরায়ে মীলাদ নামায়ে আম্বিয়া (আ:)
ভারত উপমহাদেশে মুসলিম সভ্যতার জাগরণে আবুল হাসান আলী নদভির শিক্ষাচিন্তা